What is Atmosphere? Perfect Classification of Meteorology and Climatology

Evolution of Atmosphere - Classification of Meteorology and Climatology
What is Atmosphere? Classification of Meteorology and Climatology

Table of Contents
Read also Nature and Scope of Biogeography
Evolution of Atmosphere
মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীপৃষ্ঠকে বেষ্টন করে যে অদৃশ্য গ্যাসীয় আবরণ, অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা ও জলীয় বাষ্প পৃথিবীর সঙ্গে আবর্তিত হচ্ছে তাকে বায়ুমণ্ডল বলা হয়। এর গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে প্রায় 10,000 কিমি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসীয় আবরণের ঘনত্ব দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। বায়ুমণ্ডলের বিস্তার 10,000 কিলোমিটার হলেও বায়ুমন্ডলের উপাদানের প্রায় 97% পদার্থই রয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে 29 কিমি উচ্চতার মধ্যেই। কারণ বায়ুমন্ডলের এই অংশেই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব সবচেয়ে বেশি। এই অংশটুকু আবহবিদ্যার (Meteorology) অন্তর্গত। এর ওপরের অংশ অ্যারোনমি (Aeronomy) বিদ্যার অংশ।
1.1. বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি ও বিবর্তন (Origin and Evolution of Atmosphere) :
এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রতিটি উপাদানই যেখানে অস্থিতিশীল, পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্নে সৃষ্ঠ অতিপ্রাকৃত (Primordial) বায়ুমণ্ডল কালের সাপেক্ষে বিবর্তিত হয়ে বর্তমান বায়ুমণ্ডলের রূপ ধারণ করেছে, এটাই স্বাভাবিক। বিজ্ঞানীদের মত অনুযায়ী, পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের প্রকৃতি এক ছিল না, তা কালের আপেক্ষে বিবর্তিত হতে হতে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। তাঁদের মত অনুযায়ী, সৃষ্টির আদিপর্বে পৃথিবী ছিল একটি উত্তপ্ত গ্যাসীয় পিন্ড। এই গ্যাসীয় পিণ্ড কালক্রমে তাপ বিকিরণ করে ঘনীভূত হয়ে পড়লে এর কেন্দ্রে একটি তরল কেন্দ্রমণ্ডল এবং এর চারপাশে ঘনত্বের তারতম্য অনুযায়ী বহিঃস্তরগুলি গঠিত হয়।
অবশিষ্ঠ গ্যাসগুলি ঘনীভূত না হওয়ায় তরল বা অর্ধতরল পৃথিবীর ওপর ভেসে বেড়াতে শুরু করে। দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে এই অবশিষ্ঠ গ্যাসগুলি মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তী পর্যায়ে, তরল ভূভাগের কঠিনীভবনের ফলে তরল শিলায় আবদ্ধ গ্যাসসমূহ বিমুক্ত হয়ে নতুন বায়ুমণ্ডলের জন্ম দেয়। এই সময়ে বায়ুমণ্ডলে স্থিত প্রধান গ্যাসগুলি হল-কার্বন ডাইঅক্সাইড (10-15%), নাইট্রোজেন (8-10%) ও জলীয় বাষ্প (60-70%)।
তাপ বিকিরণ করে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হলে আকাশে বিপুল পরিমাণ মেঘের সঞ্চার ঘটে। এই প্রক্রিয়া লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলতে থাকে। জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হলে তা পৃথিবীর আকর্ষণে পৃথিবীপৃষ্ঠের দিকে ছুটে আসে। পৃথিবীপৃষ্ঠ অধিকমাত্রায় উত্তপ্ত থাকায় বৃষ্টিবিন্দু পৃথিবীপৃষ্ঠকে স্পর্শ করার পূর্বেই বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে ফিরে যায়। অনুমান করা হয়, এই প্রক্রিয়া লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলতে থাকে। পৃথিবীপৃষ্ঠ শীতল হলে, অবিরাম (প্রায় 40,000 বছর) বারিবর্ষণ চলতে থাকে। ফলে, পৃথিবীর অবনমিত অঞ্চলগুলি জলে পূর্ণ হয়ে সৃষ্টি হয় বারিমণ্ডল (Hydrosphere) এবং উত্থিত অংশগুলি মহাদেশের (Continents) অংশরূপে অবস্থান করতে থাকে। এই বৃষ্টির ধারা বায়ুমণ্ডল থেকে কেবলমাত্র জলীয় বাষ্পকেই স্থানান্তরিত করেনি, বাতাস থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইডকে মুক্ত করে সমুদ্রবক্ষে প্রচুর পরিমাণে কার্বনেট শিলার জন্ম দিয়েছে।Meteorology and Climatology

মুক্ত অক্সিজেনের বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে বিজ্ঞান মহলে দুটি মত প্রচলিত আছে। একদল বিজ্ঞানীর মত অনুযায়ী জলীয় বাষ্প পরিচলন স্রোত (Convection current) দ্বারা উর্ধ্বাকাশে নিক্ষিপ্ত হলে তা অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণুতে বিয়োজিত হয়। হাইড্রোজেন গ্যাস তুলনামূলকভাবে হালকা হওযায় ওপরের দিকে উঠে যায়। অন্যদিকে অক্সিজেন পরমাণু আপেক্ষিকভাবে ভারী হওয়ায় বায়ুমণ্ডলের নীচেই থেকে যায় এবং পরবর্তী পর্যায়ে অন্য অক্সিজেন পরমাণুর সাঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে অক্সিজেন অণু গঠিত হয়। অক্সিজেন অণু গঠনের এই প্রক্রিয়া এত ধীর যে এই পদ্ধতিতে বর্তমান বায়ুমন্ডলে উপস্থিত অক্সিজেনের জোগানকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।
ভিন্ন মত অনুযায়ী উদ্ভিদ জগতই অক্সিজেন সরবরাহের প্রধান উৎস। উদ্ভিদ জল, বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের সময় প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন উৎপন্ন করে। বর্তমান বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের প্রাচুর্যের প্রধান উৎস হল উদ্ভিদকূল। উদ্ভিদকূলের আবির্ভাবের পূর্বেই ছিল প্রাণীদের অস্তিত্ব। প্রশ্ন ওঠে তা কী করে সম্ভব? ওই যুগে ক্লোরোফিল সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যাকটিরিয়া সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় প্রচুর মুক্ত অক্সিজেন প্রস্তুত করতে সমর্থ হয়। এরপর পৃথিবীতে এলো সবুজ উদ্ভিদের সমারহ। ক্রমাগত বায়ুমন্ডলকে অক্সিজেনের জোগান দিয়ে সবুজ উদ্ভিদ পৃথিবীতে প্রাণের প্রাচুর্য ঘটায়।Meteorology and Climatology
আজ থেকে প্রায় 60 কোটি বছর পূর্বে অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল প্রাণীকূলের সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যায়। এর কিছুদিন পর ডেভোনিয়ন উপযুগে স্থলভাগের ওপর স্থলজ উদ্ভিদের বিস্তার ঘটে। এভাবে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অক্সিজেনের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি হলে পার্থিব বায়ুমণ্ডল ভীষণভাবে বিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তনের ধারা আজও অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
বায়ুমণ্ডল গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে নাইট্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ ছিল মাত্র 8-10%। আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 78-084%। বাতাসে বিপুল পরিমাণ মুক্ত নাইট্রোজেন সংযুক্ত হওয়া ও ভারসাম্য রক্ষার পিছনে যে কারণগুলি বর্তমান সেগুলি হল-(i) আগ্নেয় শিলার বিয়োজনের ফলে সৃষ্ট মুক্ত নাইট্রোজেন, (ii) আগ্নেয়গিরি থেকে অক্সাইড রূপে নাইট্রাস অক্সাইডের নির্গমন ও বিয়োজন এবং (iii) সিউডোমোনাস ও প্যারাকক্কাস-এর মতো কিছু ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া জীবজ নাইট্রোজেনকে প্রাণীদেহ থেকে বায়ুমণ্ডলে মুক্ত নাইট্রোজেন রূপে নির্গত করে।Meteorology and Climatology
1.2. বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান (Atmospheric Science) :
বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের উৎপত্তি, বিবর্তন এবং পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত ঘটনাবলির বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যালোচনাই হল বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান (Atmospheric Science)। বায়ুমণ্ডলের এই সমস্ত উপাদানগুলি হল-উয়তা, বায়ুরচাপ, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুর আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি। বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানকে তিনটি প্রধান শাখায় ভাগ করা হয়। যথা-
- আবহবিদ্যা (Meteorology),
- জলবায়ুবিদ্যা (Climatology) ও
- অ্যারোনমি (Aeronomy)।

Meteorology পদবাচ্যটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘Meteor’ অর্থাৎ ঊর্ধ্ববায়ুমণ্ডল সংক্রান্ত (on the things above) এবং ‘Logy’ বা ‘Logos’ অর্থাৎ বিদ্যা বা বিজ্ঞান-এর সমন্বয়ে গঠিত। ‘০’ অক্ষরটি এখানে সংযোজক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে (Meteor-o-Logy)। “Meteor’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Meteoron’ থেকে এসেছে। আবহবিদ্যা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব 340 শতক থেকে গ্রিক পণ্ডিত অ্যারিস্টলের হাত ধরে। অ্যারিস্টট্ল লিখিত মেটেওরলজিকা (Meteorologica) আবহবিদ্যার একটি অমূল্য সম্পদ।Meteorology and Climatology
আবহবিদ্যা বলতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট সময়ে আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলির অবস্থার বিজ্ঞান ভিত্তিক পর্যালোচনাকে বোঝায়। আবহাওয়া (Weather) বলতে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের কোনো নির্দিষ্ট দিনের অথবা নির্দিষ্ট সময়ের বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলির অবস্থাকে বোঝায়। আর আবহবিদ্যা আবহাওয়া এই সমস্ত বিষয়গুলিকে নিয়েই পর্যালোচনা করে।
বর্তমানে আবহবিদ্যার প্রধান উদ্দেশ্য হল, আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলির অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাস (Weather forecasting) দেওয়া।
1.2.1. আবহবিদ্যার শ্রেণিবিভাগ (Sub-divisions of Meteorology):
আবহবিদ্যাকে বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্নভাবে শ্রেণিবিভাজন করা যায়। তবে প্রায়োগিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী (Based on the methods of approach) আবহবিদ্যাকে চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এটি একটি ছকের মাধ্যমে প্রকাশ করা হল-

1. দৈনন্দিন আবহবিদ্যা (Synoptic Meteorology):
একটি নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট মুহূর্তের আবহাওয়াগত অবস্থার পর্যালোচনা করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়াই দৈনন্দিন আবহবিদ্যার মুখ্য বিষয়। এই শাস্ত্রে প্রধানত বৃহৎ অঞ্চলজুড়ে আবহাওয়াগত অবস্থার পর্যালোচনা করা হয় এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে সতর্কতা জারি করা সম্ভব হয়।Meteorology and Climatology
2. গতি সংক্রান্ত আবহবিদ্যা (Dynamic Meteorology):
এটি প্রধানত শক্তির দৈশিক বণ্টন, দৈশিক বণ্টনের পার্থক্য অনুযায়ী বায়ুচাপ ঢালের বিস্তার এবং বায়ুর গতি ও দিক নিয়ে আলোচনা করে। গতি সংক্রান্ত আবহবিদ্যা দৈনন্দিন আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পুনরায় দুটি উপবিভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা-
(a) তাপগতি সম্বন্ধীয় বিদ্যা (Thermodynamic science) এবং
(b) বায়ুমণ্ডলীয় গতিবিধি সংক্রান্ত বিদ্যা (Dynamics of the atmosphere) |
3. ভৌত আবহবিদ্যা (Physical Meteorology):
ভৌত আবহবিদ্যায় ভৌত বিজ্ঞানের নীতিসমূহ প্রয়োগ করে বায়ুমণ্ডলের ঘটনাসমূহকে ব্যাখ্যা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়-নিউটনের গতিসূত্র অনুযায়ী বায়ুপ্রবাহের দিক ও গতি বিশ্লেষণ করা হয়। যেমন-কোরিওলিস বল অনুযায়ী বায়ুর গতিবিক্ষেপের ব্যাখ্যা নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
4. বিমান চলাচল সংক্রান্ত আবহবিদ্যা (Aeronautical Meteorology):
আবহবিদ্যার এই শাখায় বিমান চলাচলের জন্য বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন অবস্থার বিশ্লেষণ করা হয়। যেমন, অনুভূমিক দৃশ্যমানতা (Horizontal Visibility) আবহাওয়ার গোলযোগ সংক্রান্ত বিষয় এই শাখায় অধ্যয়ন করা হয়।Meteorology and Climatology

1.2.2. জলবায়ুবিদ্যা (Climatology):
‘Climatology’ পদবাচ্যটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘Clima’ অর্থাৎ ঢাল বা অবক্রম এবং ‘logy’ বা ‘logos’ অর্থাৎ বিদ্যা বা বিজ্ঞান-এর সমন্বয়ে গঠিত। এখানে ‘Clima’ বলতে অক্ষাংশ ভেদে জলবায়ুর উপাদানগুলির ধারাবাহিক পরিবর্তনকে বোঝানো হয়েছে। জলবায়ুবিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয়বস্তু হল জলবায়ুর অধ্যয়ন।
কিচফিল্ড (Critchfield)-এর মত অনুযায়ী, জলবায়ুবিদ্যা হল বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা, যা জলবায়ুর প্রকৃতি বিচারবিশ্লেষণ ও স্থানভেদে এদের তারতম্যের কারণ ব্যাখ্যা করে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানুষের কার্যাবলির সঙ্গে জলবায়ু কীভাবে সম্পর্কিত তার স্বরূপ উদ্ঘাটন করে। (Climatology is the science that seeks to describe and explain the nature of climates, why it differs from place to place and how it is related to other elements of the natural environment and human activities.)
জলবায়ু বলতে আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলির 30-35 বছরের গড় অবস্থাকে বোঝায়। তবে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) অনুযায়ী কোনো অঞ্চলের জলবায়ু নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণত 31 বছরের আবহাওয়ার উপাদানগুলির সামগ্রিক অবস্থার বিচার করা উচিত।Meteorology and Climatology
কোপেন এবং ডে-লং (Koppen and De Long)-এর মত অনুযায়ী, জলবায়ু দীর্ঘ সময় ধরে আবহাওয়ার উপাদানগুলির সমন্বয়ের সংক্ষিপ্তসার। (“Climate is a summary, a composite of weather condititions over a long period of time”. Koppen and De Long)¹
ট্রেওয়ার্থা (Trewartha) প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী, জলবায়ু হল কোনো একটি অঞ্চলের দীর্ঘকালীন বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলির সার্বিক অবস্থা। (“Climate represents a composite of the day to day weather conditions, and of atmospheric elements, within a specified area over a long period of time”.-G. T. Trewartha)
গ্রিফিথ টেলর (G. G. Taylor) প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী, জলবায়ু হল আবহাওয়ার সমন্বয়। আবার, আবহাওয়া হল জলবায়ুর বিভাজিত রূপ। সময়ই আবহাওয়া এবং জলবায়ুর পৃথকীকরণের প্রধান উপাদান। (“Climate is the integration of weather and weather is the differentiation of climate. The distinction between weather and climate is mainly one of time – G. F. Taylor)
জলবায়ুবিদ্যার উপবিভাগ (Sub-divisions of climatology):
জলবায়ুর প্রকৃতি অনুযায়ী জলবায়ুবিদ্যাকে 5টি উপবিভাগে ভাগ করা যায়। এটি একটি ছকের মাধ্যমে প্রকাশ করা হল-

1. ভৌত জলবায়ুবিদ্যা (Physical Climatology):
ভৌত জলবায়ুবিদ্যা ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের জলবায়ুগত অবস্থা নিয়ে আলোচনা করে। এটি প্রধানত তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহের সময়ানুসারে দৈশিক বণ্টন নিয়ে আলোচনা করে। ভৌত জলবায়ুবিদ্যার প্রধান বিষয়বস্তু হল-সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল, উয়তার বণ্টন, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত, কুয়াশা ইত্যাদি I
2. গতি সম্বন্ধীয় জলবায়ুবিদ্যা (Dynamic Climatology):
জলবায়ুবিদ্যার এই শাখাটি বায়ুমণ্ডলের মধ্যে উত্তাপ ও জলীয় বাষ্পের সঞ্চলন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়-সময়ান্তরে গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির পরিমাণ অনুসন্ধান করা, বিশ্ব উন্নায়নের প্রভাব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভৌত জলবায়ুবিদ্যা আলোচনা করে।Meteorology and Climatology
3. সিনপ্টিক জলবায়ু (Synoptic Climatology):
ভৌত ও গতিসম্বন্ধীয় জলবায়ুবিদ্যার বিভিন্ন বিষয়ের বিশ্লেষণের একটি প্রধান হাতিহার হল সিনপ্টিক চার্ট যা সিনপ্টিক জলবায়ুর প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। এটি ক্ষুদ্র বা বৃহৎ যে-কোনো অঞ্চলের জলবায়ুগত অবস্থা বিশ্লেষণের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-এল-নিনোর প্রভাব বিশ্লেষণ সিনটিক জলবায়ুবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়বস্তু।

4. আঞ্চলিক জলবায়ুবিদ্যা (Regional Climatology):
বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর উপাদানগুলির স্থানিক বণ্টন নিয়ে আঞ্চলিক জলবায়ুবিদ্যা আলোচনা করে। আঞ্চলিক জলবায়ুবিদ্যাকে বিস্তৃতি অনুযায়ী তিনটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। যথা-
(i) বৃহৎ জলবায়ুবিদ্যা (Macro-climatology):
এরূপ জলবায়ুর বিশ্লেষণের ক্ষেত্রীয় বিস্তার অধিক।জলবায়ুর উপাদানগুলির সমসত্বতা অনুযায়ী সমগ্র পৃথিবীকে কয়েকটি মুখ্য জলবায়ু অঞ্চলে বিভক্ত করে জলবায়ুর চরিত্র বিশ্লেষণ করা হয়। এখানে আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানগুলি, যথা-বায়ুর উন্নতা, আর্দ্রতা, বায়ুর চাপ ও বায়ুপ্রবাহের গতিপ্রকৃতির দৈশিক বণ্টনের বিশ্লেষণ ও মানচিত্র অঙ্কন করা হয়।
কোপেন, থর্নথওয়েট, স্ট্রলার, অলিভার, ট্রেওয়ার্থা প্রমুখ বিজ্ঞানীগণ নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী পৃথিবীকে কয়েকটি বৃহৎ জলবায়ু অঞ্চলে বিভক্ত করেছেন।Meteorology and Climatology
বৃহৎ জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য:
- (i) একটি নির্দিষ্ট জলবায়ু অঞ্চলে জলবায়ুর উপাদানগুলি প্রায় সমধর্মী,
- (ii) জলবায়ু অঞ্চলের বিস্তার-এর নিয়ন্ত্রকগুলি দ্বারা নির্ধারিত হয়,
- (iii) উপাদানগুলির সুস্পষ্ট পার্থক্য অনুযায়ী জলবায়ু অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ সম্ভব হয় না। দুটি জলবায়ু অঞ্চলের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তী অঞ্চল অবস্থান করে। এই অংশে পাশাপাশি দুটি জলবায়ু অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তনশীল অবস্থায় থাকে,
- (iv) একটি বৃহৎ জলবায়ু অঞ্চলের মধ্যে উপাদানগুলির স্থানগত পার্থক্যের কারণে একাধিক উপজলবায়ু অঞ্চল তৈরি হয়,
- (v) উদ্ভিদের প্রকৃতি ও বণ্টন দ্বারা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সূচিত হয়,
- (vi) একটি নির্দিষ্ট বৃহৎ জলবায়ু অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদের প্রকৃতি, জীবজন্তুর বণ্টন, মানুষের খাদ্যাভ্যাস, বাসস্থান ও জীবনযাত্রার পদ্ধতি প্রায় একই রকম থাকে।
ভ্লাদিমির কোপেন মাসিক গড় উন্নতা ও মোট বার্ষিক বৃষ্টিপাতের বণ্টনের তারতম্যের ওপর নির্ভর করে পৃথিবীকে 5টি বৃহৎ জলবায়ু অঞ্চলে বিভক্ত করেন। এই 5টি বিভাগ প্রকৃতপক্ষে 5টি প্রধান স্বাভাবিক উদ্ভিদ অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত। জলবায়ুর প্রতিটি বিভাগ ইংরেজি বড়ো হাতের এক-একটি অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যথা-
অক্ষর | জলবায়ুর নাম |
---|---|
A | ক্রান্তীয় বৃষ্টিবহুল অরণ্য জলবায়ু। |
B | শুষ্ক জলবায়ু। |
C | উয় নাতিশীতোয় বৃষ্টিবহুল জলবায়ু। |
D | শীতল তুষারময় অরণ্য জলবায়ু। |
F | মেরু জলবায়ু I |
অনুরূপভাবে আবহবিজ্ঞানী থর্নর্থওয়েট পৃথিবীকে কতকগুলি বৃহৎ বা ম্যাক্রো জলবায়ু অঞ্চলে ভাগ করেন। তিনি সরাসরি উন্নতা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণকে পৃথিবীর জলবায়ু বিভাজনের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ না করে আর্দ্রতা ও শুষ্কতার সূচকের (humidity and aridity index) সমন্বয়ে গঠিত আর্দ্রতার সূচক (moisture index) অনুযায়ী পৃথিবীকে চটি বৃহৎ জলবায়ু অঞ্চলে এবং সম্ভাব্য বাষ্পীয়-প্রস্বেদনের মাত্রা অনুযায়ী 5টি উন্ন প্রদেশে বিভক্ত করেন। / Meteorology and Climatology / আর্দ্রতা ও উন্নতা প্রদেশ সমূহ নীচে সারণির মাধ্যমে প্রকাশ করা হল-
আর্দ্রতা সূচক (Moisture Index) | আর্দ্রতা প্রদেশ (Moisture Province) | সম্ভাব্য-বাষ্পীয় প্রস্বেদন (Potential evapo- transpiration) | উয়তা প্রদেশ (Temperature Province) |
---|---|---|---|
>100 | অতি আর্দ্র প্রদেশ (A) | >114 | মেগাথার্মাল (A’) |
20-100 | আর্দ্র প্রদেশ (B) | 57-114 | মেসোথার্মাল (B’) |
-33-20 | নাতি আর্দ্র (C) | 28-5-57 | মাইক্রোথার্মাল (C) |
-67-(-33) | নাতি শুষ্ক (D) | 14-25-28-50 | তুন্দ্রা (D’) |
<-67 | শুষ্ক বা মরু (E) | <14-25 | চির তুষার (E’) |
জলবায়ু বিজ্ঞানী স্টুলার ও অলিভার ম্যাক্রো জলবায়ু অঞ্চল নির্দেশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকার বায়ুপুঞ্জের অবস্থানকে শ্রেণিবিভাজনের ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেন।
বৃহৎ আকারে সংঘটিত আবহাওয়া বা জলবায়ু সংক্রান্ত ঘটনাকে ম্যাক্রো-জলবায়ুর আলোচ্য বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়।
(ii) মেসো বা মাঝারি জলবায়ুবিদ্যা (Meso-climatology):
দৈশিক বিস্তৃতির বিচারে প্রতিটি ম্যাক্রো জলবায়ুর উপবিভাগগুলিই মেসো বা মাঝারি জলবায়ুর অন্তর্গত। ক্রান্তীয় জলবায়ু যদি ম্যাক্রো-জলবায়ুর অন্তর্গত হয় তবে মৌসুমি জলবায়ু (Am) বা সাভানা জলবায়ু (Aw) হবে মেসো জলবায়ুর অন্তর্গত। মৌসুমি বা সাভানা জলবায়ু ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলের মধ্যে স্বকীয়তা বজায় রেখে চলেছে। কিছু জলবায়ুগত ঘটনাও মাঝারি জলবায়ুর আলোচনা ক্ষেত্রের মধ্যেই পড়ে। টর্নেডো, নাতিশীতোয় বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের ব্যাপকতা স্বল্প পরিসরে ও স্বল্প সময়ের মধ্যে সংঘটিত হয়ে থাকে। স্বল্প সময় ও স্বল্প পরিসরে সংঘটিত হওয়ায়, টর্নেডোকে মেসোক্লাইমেটের অংশ হিসেবে আলোচনা করা হয়।Meteorology and Climatology
iii) অণু জলবায়ুবিদ্যা বা মাইক্রো-ক্লাইমেটোলজি (Micro-climatology):
স্বল্প পরিসর স্থানে, স্বল্প সময়ের ব্যবধানে মানুষের কার্যকলাপের ফলে স্বল্পপরিসর স্থানের স্বল্প সময়ের নিরিখে আবহাওয়া ও জলবায়ুর ধারাবাহিক পরিবর্তনকে অণু জলবায়ু বলে। সকালবেলা পার্বত্য ঢালের ওপরের অংশ সূর্যের তাপে উত্তপ্ত হলে উপত্যকার নীচের অংশের ভারী ও শীতল বাতাস বায়ুচাপের পার্থক্যের কারণে উপত্যকার ওপরের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। আবার সূর্য অস্তমিত হলে উপত্যকার ওপরের বাতাস শীতল ও ভারী হয়ে উপত্যকার ঢাল বেয়ে ধীরে ধীরে উপত্যকার নীচের অংশে নেমে এসে উপত্যকার নীচের গরম বাতাসকে ওপরের দিকে ঠেলে তুলে দেয়। তাই সন্ধ্যায় কুলু উপত্যকার মাঝ উচ্চতায় উপত্যকার নীচের অংশ অপেক্ষা উন্নতা বাড়ে ও ওই অংশের অধিবাসীরা আরামবোধ করে। এরূপ সাময়িক ও দৈশিক পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয় অণু জলবায়ুর আলোচ্য বিষয়।Meteorology and Climatology

মানুষের ক্রিয়াকলাপের ফলে সৃষ্ট কিছু কিছু ঘটনাও অণু জলবায়ুর আলোচ্য বিষয়। যেমন-শিল্প শহরগুলিতে শিল্পকারখানা নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া (NO, SO, etc.) কুয়াশার সঙ্গে মিশে বিষাক্ত ধোঁয়াশা অথবা অম্ল বৃষ্টির (Acid rain) মতো ঘটনার সৃষ্টি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীদের ওপর এর প্রভাব ও স্থিতিকাল সম্পর্কে অধ্যয়ন বা বিশ্লেষণ অণু জলবায়ুবিদ্যার আলোচ্য বিষয়।Meteorology and Climatology
ফলিত জলবায়ু বিদ্যা (Applied climatology):
জলবায়ুবিদ্যার এই শাখায় জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে জলবায়ুবিদ্যার জ্ঞানকে কাজে লাগানো হয়। এই শাখায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়। জলবায়ুর উপাদান সম্পর্কিত জ্ঞানের আলোকই মনুষ্য জীবনে স্বাচ্ছন্দ এনে দিতে পারে। জলবায়ুর উপাদানগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে কৃষিবলয় গড়ে তুলতে পারলে কৃষির সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। কৃষি জলবায়ুবিদ্যার জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব উন্নায়নের ফলে কুলু উপত্যকায় আপেল উদ্যানে রসুন ও স্ট্রব্যারির চাষ করা হচ্ছে। আবহাওয়া ও জলবায়ুবিদ্যার অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের উৎপাদন সংক্রান্ত সমস্যা, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিল্প ও বিভিন্নক্ষেত্রের দূষণ প্রভৃতি সমস্যার সমাধান করা হয়।
এ ছাড়াও বায়ুশক্তি উৎপাদন ও বিমান নামা ও ওঠার জন্য রানওয়ের (run way) বিন্যাসের জন্য আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত জ্ঞান আবশ্যক। বাধাহীনভাবে বিমানের ওঠা ও নামার জন্য রানওয়ে তৈরির সময় বায়ুরগতির দিক অনুসরণ করা হয়। কৃষিক্ষেত্রে কৃষকরা জলবায়ুবিদ্যার জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ফসলের চাষ করে থাকে। বায়ুপ্রবাহের দিক অনুসারে অর্থাৎ, বায়ু যেদিক থেকে প্রবাহিত হয় কৃষিক্ষেত্রের বায়ুঅভিমুখের প্রথম সারিতে যাতে পুরুষ ফুল প্রস্ফুটিত হয় তার দিকে লক্ষ রাখা হয়। কারণ এতে পুরুষ ফুলের পরাগ বায়ুর দ্বারা বাহিত হয়ে স্ত্রীফুলের সঙ্গে পরাগমিলনে সাহায্য করে। এর ফলে সহজে ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়।Meteorology and Climatology
বর্তমানে জলবায়ুবিদ্যার গুরুত্ব অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বিদ্যায় বহুশাখা আবির্ভূত হয়েছে। যথা-কৃষি জলবায়ুবিদ্যা, জীব জলবায়ুবিদ্যা, পৌর জলবায়ুবিদ্যা, চিকিৎসা জলবায়ুবিদ্যা ও পূর্ত জলবায়ুবিদ্যা ইত্যাদি।
1.2.3. অ্যারোনমি (Aeronomy):
বায়ুমন্ডলের গঠন এবং বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ও বিবর্তনের ওপর বায়ুমণ্ডলের অভ্যন্তরস্থ ও বহিস্থ শক্তির বৈজ্ঞানিক চর্চাই অ্যারোনমির প্রতিপাদ্য বিষয়। এই শাস্ত্রে বায়ুমণ্ডলের গঠন, বায়ু চলাচল, শক্তির সঞ্চলন এবং সৌরবিকিরণ যা বায়ুমণ্ডলীয় বিভিন্ন ঘটনাবলিকে শক্তি জোগায় তা এই শাস্ত্রে আলোচিত হয়। মধ্য ও ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনাবলির থেকে গৃহীত অনুসিদ্ধান্তগুলি অন্যান্য গ্রহ ও উপগ্রহের ওপর প্রয়োগ করা হয়।Meteorology and Climatology
Impressive posts! My blog ZQ3 about Thai-Massage also has a lot of exclusive content I created myself, I am sure you won’t leave empty-handed if you drop by my page.
It is always great to come across a page where the admin take an actual effort to generate a really good article. Check out my website 87N concerning about Airport Transfer.
Great post! I learned something new and interesting, which I also happen to cover on my blog. It would be great to get some feedback from those who share the same interest about Airport Transfer, here is my website FQ6 Thank you!
Informative articles, excellent work site admin! If you’d like more information about Cosmetics, drop by my site at UQ4 Cheers to creating useful content on the web!