Nature and Scope of Biogeography

Nature and Scope of Biogeography/জীব-ভূগোলের প্রকৃতি ও পরিধি

Nature and Scope of Biogeography ,this image is collected from freepic.com
গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন প্রস্তর যুগের স্থান
Table of Contents
জীব-ভূগোল হল জীব-বিজ্ঞান ও ভূগোলের মূল ধারণাগুলির সম্মিলনের ফলে উদ্ভূত বিজ্ঞানের একটি শাখা বিশেষ। জীব-ভূগোলের মূল আলোচ্য বিষয় প্রধানত জীবমণ্ডল-কেন্দ্রিক। শিলামণ্ডল (Lithosphere), বায়ুমণ্ডল (Atmosphere) এবং বারিমণ্ডলের (Hydrosphere) যে অংশে জীবজগতের বাস, সেই অংশটিকেই সামগ্রিকভাবে জীবমণ্ডল (Biosphere) হিসাবে চিহ্নিত করা হয় । জীবমণ্ডলের অন্তর্গত সব ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদ এবং এদের ক্রিয়াকলাপকে নিয়ন্ত্রণকারী সমস্ত জটিল জৈবনিক প্রক্রিয়াগুলি জীব-ভূগোলের পরিধিভুক্ত। জীব-ভূগোলের উদ্দেশ্য হল-ভূ-পৃষ্ঠে জীব ও জৈবনিক প্রক্রিয়াগুলির বন্টন সংক্রান্ত আলোচনা এবং এই বন্টনের কারণ বিশ্লেষণ করা।
সুতরাং জীব-ভূগোল হল জীবন বিজ্ঞান (Biology) ও ভূগোল (Geography)- বিজ্ঞানের এই দুই প্রধান শাখারই আলোচ্য বিষয়। এ কারণে জীব-ভূগোলের বিচরণক্ষেত্র বিজ্ঞানের অন্যান্য কতকগুলি বিষয়ের পরিধির অন্তর্গত। ভূ-তত্ত্ববিদ (Geologist), আবহবিদ্ (Meteorologist), মৃত্তিকাবিজ্ঞানী (Pedologist), ভূমিরূপবিদ (Geomorphologist), উদ্ভিদবিজ্ঞানী (Botanist), প্রাণীবিজ্ঞানী (Zoologist), ভৌগোলিক (Geographer) প্রভৃতি সহ বিজ্ঞানের আরও অনেক শাখার বিশেষজ্ঞগণ জীব-ভূগোলের কোনও না কোনও বিশেষ অংশের অনুশীলন করেন। এ কারণে এঁদের প্রত্যেকেরই জীব-ভূগোল সংক্রান্ত জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরী। ফলে জীব-ভূগোলের ধারণা ও জীব-ভূগোল পাঠের দৃষ্টিভঙ্গী নির্ভর করে ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, অনুশীলন ক্ষেত্র এবং পঠনের উদ্দেশ্যের উপর।

জীব-ভৌগোলিকদের কাছে দুটি প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য বা প্রক্রিয়ার স্থানিক পার্থক্য (spatial variation)সংক্রান্ত আলোচনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত পরিবেশের জৈব ও অজৈব উপাদানগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। শিলামণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও বারিমণ্ডলের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া এবং পারস্পরিক আদান-প্রদানের উপরেই জীবমণ্ডলের প্রকৃতি নির্ভর করে। দ্বিতীয়ত মানুষ এবং জীবমণ্ডলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। এ বিষয়টি মানুষের সাথে পরিবেশের সম্পর্কের উপর আলোকপাত করে। বিজ্ঞান ও কারিগরীবিদ্যায় উন্নত হওয়া সত্ত্বেও মানুষকে খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনে জীবমন্ডলের উপরেই নির্ভর করতে হয়। কিন্তু অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় মানুষের বুদ্ধিমত্তা বেশী হওয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করার ক্ষমতা মানুষেরই সবচেয়ে বেশী। সুতরাং মানুষ জীবমণ্ডলের শুধু একটি প্রয়োজনীয় অংশই নয়, বাস্তুতান্ত্রিক দিক থেকে জীবমণ্ডলের প্রধান জীবও বটে।

সংক্রান্ত আলোচনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত পরিবেশের জৈব ও অজৈব উপাদানগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। শিলামণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও বারিমণ্ডলের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া এবং পারস্পরিক আদান-প্রদানের উপরেই জীবমণ্ডলের প্রকৃতি নির্ভর করে। দ্বিতীয়ত মানুষ এবং জীবমণ্ডলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। এ বিষয়টি মানুষের সাথে পরিবেশের সম্পর্কের উপর আলোকপাত করে। বিজ্ঞান ও কারিগরীবিদ্যায় উন্নত হওয়া সত্ত্বেও মানুষকে খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনে জীবমন্ডলের উপরেই নির্ভর করতে হয়। কিন্তু অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় মানুষের বুদ্ধিমত্তা বেশী হওয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করার ক্ষমতা মানুষেরই সবচেয়ে বেশী। সুতরাং মানুষ জীবমণ্ডলের শুধু একটি প্রয়োজনীয় অংশই নয়, বাস্তুতান্ত্রিক দিক থেকে জীবমণ্ডলের প্রধান জীবও বটে।
জীব-ভূগোলকে বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন এবং তদনুসারে জীব-ভূগোলের
আলোচ্য বিষয় এবং পরিধি সম্পর্কিত নানা মত উপস্থাপিত হয়েছে তবে জীব-ভূগোলের পরিধি এবং বিষয়বস্তু
নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর যথা-
(ক) জীবমণ্ডলকে কোন দৃষ্টিকোণ (ভৌগোলিক বা জীব বৈজ্ঞানিক বা কোনটিই নয়) থেকে বিচার করা হবে।
(খ) জীবমণ্ডলে মানুষের ভূমিকাকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হবে।

বহু জীব-বিজ্ঞানী মানুষকে পরিবেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে মনে করলেও অনেকের মতে মানুষ একটি অপ্রাকৃতিক উপাদান। কিন্তু ভৌগোলিকদের কাছে মানুষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতান্ত্রিকউপাদান। আবার মার্গারেট অ্যান্ডারসন (Margaret Anderson)-এর মতে অন্যান্য প্রাণীর ন্যায় মানুষও এক ধরনের প্রাণী মাত্র। একটি প্রাণী হিসাবে মানুষ ও তার পরিবেশের (জৈব ও অজৈব) পারস্পরিক সম্পর্কই জীব-ভূগোলের মূল বিষয়বস্তু।
জীব-ভূগোলে উদ্ভিদ-ভূগোলের প্রাধান্য (Predominance of Phytogeography within Biogeography)
উদ্ভিদ ও প্রাণী-এই উভয়প্রকার জীব সংক্রান্ত পঠন-পাঠনই জীব-ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত। তা সত্ত্বেও উদ্ভিদ-ভূগোলের উপরেই বেশী গুরুত্ব আরোপিত হয়েছে। এর কারণগুলি হল নিম্নরূপ।
প্রথমত: উদ্ভিদের তুলনায় প্রাণীদের চলনশীলতা (mobility) অপেক্ষাকৃত বেশী।
দ্বিতীয়ত: একই বাস্তক্ষেত্রে (habitat) বসবাসকারী প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা অপেক্ষা বেশী। তাই প্রাণীর বণ্টনপ্রকৃতির অধ্যয়ন যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
তৃতীয়তঃ পৃথিবীর মোট জীবভরের (biomass) সিংহভাগ অধিকার করে রয়েছে উদ্ভিদমণ্ডলী। অপরপক্ষে প্রাণীজগতের জীবভর একদিকে যেমন খুব কম, তেমনি বেশীরভাগ প্রাণী আণুবীক্ষণিক আকৃতির এবং এদের অধিকাংশই মৃত্তিকায় বসবাস করে।
চতুর্থত: নিজস্ব গমন ক্ষমতা না থাকায় উদ্ভিদ যে প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠে সেই পরিবেশকে যথার্থভাবে প্রতিফলিত করতে পারে।
পঞ্চমত: জীবভর অধিক হওয়ায় বায়ুমণ্ডল ও মৃত্তিকার উপর উদ্ভিদমণ্ডলীর প্রভাব সর্বাধিক। প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে উদ্ভিদ তার প্রাকৃতিক বাস্তক্ষেত্রকে পরিবর্তিত করে এমন এক ধরনের জৈব পরিবেশ রচনা করে যার অস্তিত্ব ঐ উদ্ভিদের উপস্থিতি ব্যতিরেকে কল্পনা করা সম্ভব নয়।
ষষ্ঠত: উদ্ভিদ হল খাদ্যশক্তির মূল উৎস যা মানুষ তথা অন্যান্য প্রাণীদের খাদ্য সরবরাহ করে।
এসমস্ত কারণে জীব-ভূগোলে উদ্ভিদের প্রাধান্য থাকলেও অতি সাম্প্রতিককালে উদ্ভিদ-ভূগোলের ন্যায় প্রাণী-ভূগোলেরও যথেষ্ট উন্নতি ও বিস্তার ঘটেছে।